মুসলমানরা প্রায়ই অনান্য ধর্মের অনুসারীদের কাছ থেকে, কুরবানিতে পশু হত্যা কেন করা হয় ?এই প্রশ্নটি শুনে থাকে।
আজকে, এর উত্তর একটি প্রশ্ন দিয়েই শুরু করতে চাই!
” কুরবানিতে পশু হত্যা করা নির্মম একটি কাজ, কারন প্রাণী হত্যা মহাপাপ ”
এই উক্তিটি কি শুধু মুসলমানদের জন্যই প্রযোজ্য?
কুরবানির ঈদে পশু হত্য যদি নিষ্ঠুর কাজের জলন্ত উদাহরণ হয়ে থাকে, তাহলে বছেরে অনান্য সময় পশু হত্যা কি মহানুভূতির পরিচয় দেয়?
কুরবানি নিয়ে আরও বিস্তারিত জানার জন্য উপরের ভিডিও টি দেখতে পারেন।
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে, সূরা হাজ্জ। আয়াত – ৩৭ এ বলেছেন, আল্লাহ তায়ালার কাছে মাংস বা রক্ত পৌছায় না। আল্লাহর কাছে পৌছায় সৎকর্ম বা তাকওয়া।
কিন্তু অনান্য ধর্মে উৎসবের সময়, পশু বলি দিয়ে ফেলে রাখা হয় ঈশ্বর এর সামনে। সেটা খায় কে? ঈশ্বর খান? হতে পারে সেটা ধর্ম গুরু বা অনান্য কেউ খান।
হিন্দু ধর্মও কিন্তু পশু হত্যার বিপক্ষে নয়।
মনুস্মৃতিতে অধ্যায় নাম্বার ৫, অনুচ্ছেদ ৩১ – এ বলা হয়েছে, ঈশ্বর কিছু প্রাণীকে সৃষ্টি করেছেন উৎসর্গের জন্য।
মনুস্মৃতিতে অধ্যায় নাম্বার ৫, অনুচ্ছেদ ৪০ – এ বলা হয়েছে, উৎসর্গের জন্য প্রাণী হত্যা কোন পাপ নয়।
সহজ ভাবে বুঝার জন্য, পান্ডবদের একটি গল্প বলি
পান্ডবদের গল্প টাতো সবাই ই জানেন, পঞ্চপান্ডব পাচ ভাই, সবচেয়ে বড় ভাই যুধিষ্ঠির।
তিনি একদিন বিষ্ণুর কাছে জানতে চাইলেন, পূজার সময় কি উৎসর্গ করব, যাতে আমাদের পূর্ব পুরুষেরা সন্তুষ্ট হবেন।
বিষ্ণু উত্তরে বললেন, যদি তুমি লতা পাতা ও সাক-সব্জি উৎসর্গ দেও, তাহলে এক মাস আর মাছ উৎসর্গ করলে ২ মাস। মাংস দিলে ৩ মাস সন্তুষ্ট থাকবেন,
এভাবে বলতে থাকলেন এবং মহিষ দিলে ১১ মাস। আর গরু উৎসর্গ করলে পুরো ১ বছর সন্তুষ্ট থাকবেন।
আর সারা জীবন সন্তুষ্টির জন্য ছাগলের লালচে মাংস অথবা গন্ডারের মাংস কোরবানি করতে হবে।
এ থেকে বুঝা যায়, হিন্দু ধর্মেও পশু হত্যার বিপক্ষে বলা হয়নি।
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে (সৃষ্টির প্রতি) দয়া করে না, (আল্লাহর পক্ষ থেকে) তার প্রতি দয়া করা হয় না। [৭৩৭৬; মুসলিম ৪৩/১৫, হাঃ ২৩১৯] ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৭৫ সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬০১৩
ইসলাম ধর্মমতে অকারণ এ কোন প্রাণীকে হত্যা করা মহাপাপ ও অযথা বিনা কারণে প্রাণীকে আঘাত দেওয়া বা কষ্ট দেওয়া জঘন্য অন্যায়।
কোরবানির মাংস বন্টনের হাদিস
ইসলাম ধর্মে, কোরবানির তিন ভাগের, এক ভাগ গরীব অসহায় লোকদের জন্য, অপর এক ভাগ আত্মীয় স্বজনদের জন্য।
বাকিটা নিজের জন্য। আপনি চাইলে পুরোটাই গরীবদের নিয়ে দিতে পারেন।
এর মানে, যখন কোরবানি করা হয়, এর মাধ্যমে মানুষ জাতির উপকার করা হয়।
গরীর মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। এখন মানুষের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা, এটি ভাল নাকি খারাপ?
যদি একটু লজিক্যালি চিন্তা করি, তাহলে দেখবেন
আমাদের বেচে থাকার যে সব উপকরণ রয়েছে তার অধিকাংশই জীব!
যেমন বেচে থাকার জন্য ঘর বানাই,এই ঘর বানাতে গাছের প্রয়োজন হয়,বাঁশের প্রয়োজন হয়।
এ গুলোও তো জীব। তাহলে কি গাছ কাটলেও মহা পাপ হবে?
আবার আমাদের খাদ্যপ্রণালির মধ্যে মাছ,মুরগী ও মাংস খাই এগুলো সবই তো জীবের অন্তরভুক্ত।
প্রতি বছর ডেনমার্কে সাগরের মধ্যে হাজার হাজার ডলফিনকে হত্যা করা হয়, এমন কি সাগরের পানি পর্যন্ত এদের রক্তে লাল হয়ে যায়, তখন তার বলে- এটি একটি উৎসব.!!
প্রতি বছর ইয়াহুদীদের একটি গোত্র হাজার হাজার মুরগিকে পাথর মেরে হত্যা করে। তাদের বিশ্বাস হলো এভাবে পাথরের উপর মুরগী মারা হলে তাদের পাপ মাপ হয়ে যায়। তখন তারা বলে এটি তাদের ধর্ম ও বিশ্বাস.!!
খ্রিস্টানরা নতুন বছর উৎযাপনের নামে খাওয়ার জন্য শত শত ভারতীয় পাখিকে হত্যা করে। এই পাখি খাওয়াকে তারা নববর্ষের উত্ত
প্রতি বছর হিন্দুরা পূজার সময় লক্ষ লক্ষ মহিশ পাঠা ছাগল বলি দেয় এবং তখন তারা বলে এটা আমাদের ধর্মীয় রীতি। এই বলি গুলো আমরা আমাদের দেবতাদের খুশি করার জন্য দেই.!!
কিন্তু_মুসলমানরা যখন আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কুরবানিতে পশু হত্যা করে, আর তার মাংস গরীবদের মাঝে বিতরণ করে… তখন অমুসলিমদের কাছে হয়ে যায় পশু হত্যাছ মহা পাপ।
ইসলাম ধর্মে হচ্ছে শান্তির ধর্ম। আমরা কখনই অপ্রয়োজনে কোনো পশু হত্যা করতে পারি না।
কারণ আমরা জানি, যে (সৃষ্টির প্রতি) দয়া করে না, (আল্লাহর পক্ষ থেকে) তার প্রতি দয়া করা হয় না।
এইরকম পোষ্ট এবং ভিডিও নিয়মিত দেখতে আমাদর ইউটিউব ফেসবুক ও ইন্স্ট্রাগ্রাম পেজ কে অনুসরণ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।